অনামিকার ভাবনা - পঁচিশ (25)

আমাদের প্রিয় নিবাস
নবাব ফয়জুন নেসা হল।

তৎকালীন সময়ে অর্থাৎ আমাদের সময়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের জন্য বরাদ্দ ছিল একটি মাত্র হল। যে হলটি নবাব ফয়জুন নেসা হল নামে সকলের কাছে ছিল সুপরিচিত । যে হলটি শুধুমাত্র সুশিক্ষিত নাগরিক কিংবা ছাত্রীরই জন্ম দেয়নি বরং জন্ম দিয়েছিল এবং ক্রমাগতই জন্ম দিয়েই যাচ্ছে নবাব পরিবারের নবাবকন্যাদের। সুপাত্রী হিসাবে সুক্ষ্যাতিও রয়েছে এই সকল নবাবকন্যাদের। প্রসঙ্গত বলছি, গেল বছর নভেম্বরে আমি, আমার রমমেইট হাসি, তপু ও পান্না একসাথে লন্ডনের জাবিয়ানদের একটি আড্ডায় যোগ দিয়েছিলাম। সেই অনুষ্ঠানে তৃতীয় আবর্তন এর এক বড় ভাই রসিকতাপূর্ণআক্ষেপ করে বলেই ফেলেছিলেন যে, "তৎকালীন সময়ে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা এত কম ছিল যে, দেখতে দেখতে আর ভাবতে ভাবতেই নবাবকন্যারা নজরে পড়ে যেত নবাবপুত্রদের। অর্থাৎ ভাগ্যবানদের সংখ্যা ছিল নিতান্তই যৎসামান্য।"

ন.ফ.হল ছাত্রীদের প্রথম পুনর্মিলনী আজ পহেলা মার্চ ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপস্থিত সকলের ছবি দেখেই বুঝতে পারছি কতটা আনন্দের হয়েছে এ মিলন দিবস। দীর্ঘ একচল্লিশ বছর পরে হলেও হয়েছে। যা চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে আমাদের মনে। এছাড়াও অন্যান্য হল, বিভাগ ও অনুষদের জন্য হয়ে থাকবে ভবিষ্যৎ উদাহরণ।

যারা এই মহৎ আয়োজন এর উদ্যোগ নিয়েছিল তাদের জন্য রইলো আমার পক্ষ থেকে সফলতার বাড়তি শুভেচ্ছা । সকলের একত্রিত হবার স্বদিচ্ছা, আগ্রহ নতুন করে প্রাণ সঞ্চারিত করেছে নবাব ফয়েজুন্নেছা হলের। জন্ম হলো প্রথম রিইউনিয়ন এর। এ দিনটি আমার পরিবার এর জন্যে ও বিশেষ একটি দিন। আমার ছোট মেয়ে ও তার বাবার জন্মদিন। বন্ধু সাজেদ এর ও জন্মদিন এই দিনে।

শুনেছি আমাদের হলের জামাইদের আদর হয়েছে ঘটা করে। তবে নবাবকন্যাদের প্রাপ্তির যোগ্য নবাবপুত্র স্বামী আদরের বিষয়টি এখনো আমার কাছে অপরিষ্কার। যদিও উপস্থিত থাকতে পারিনি তোমাদের ছবি দেখে প্রশান্তি লাভ করেছি অনেকটা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো করেই।

পহেলা ফেব্রুয়ারি অষ্টম আবর্তনের মিলনায়োজনটিকে কেন্দ্র করেই দেশে গিয়েছিলাম আমরা চারজন। আমি,হাসি, ডোরা ও কামাল । কত আনন্দ, কত প্রশান্তি, কত অতীতস্মৃতিজাগানিয়া ভালোলাগা! সেই ভালো লাগার স্মৃতি নিয়ে আপন গন্তব্যে পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই খবর এলো আমাদের কাশেমের চিরবিদায়ের। অষ্টম আবর্তনের কাশেমের চলে যাবার বেদনা থেকে বলছি তোমরা সবাই ভাল থেকো বন্ধুরা। প্রতিবছরই যেন ফিরে ফিরে আসে নানান উপলক্ষে, নানান সময়ে, নানান আয়োজনে মিলনের দিন। যাদের কঠোর পরিশ্রম আর ভালোবাসার জন্য সফলতা পাচ্ছে অনুষ্ঠানগুলো ,তাদের জন্য রইলো কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।

ভালো থেকো তোমরা সবাই!!!

Previous
Previous

অনামিকার ভাবনা - ছাব্বিশ (26)

Next
Next

অনামিকার ভাবনা - চব্বিশ - (24)