অনামিকার ভাবনা - আঠারো (18)

TITEL FEHLT

বাংলা নববর্ষ প্রায় সমাগত। আজ চৌঠা এপ্রিল, আর মাত্র নয় / দশটি দিন বাকী। এখনো অষ্ট্রিয়ার ভিয়েনা তথা প্রায় সমগ্র ইউরোপেই বিরাজ করছে শীতের আমেজ। এখনো পথ প্রান্তরের নানান জায়গায় ছড়িয়ে আছে কিংবা ভূলুন্ঠিত হয়ে আছে দুগ্ধ ধবল তুষার।

আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চার ডিগ্রী সেঃ এবং সর্বোচ্চ একুশ ডিগ্রী সেঃ। সারাটা দিনই প্রায় সাত-আট ডিগ্রী সেঃ ছিল। বিকেল চারটার দিকে দেখা মিললো সূর্যের। বহুদিন পর সূর্যের আভা। অন্য রকম এক অনুভূতি। চারিদিকে আলোকরশ্মির ছটা। সূর্যের হালকা উত্তাপে মনটা হয়েছে ফুরফুরে, আর শরীরেও বিরাজ করছে অন্য ধরনের এক আমেজ।

আজ যেন শুকনো ডালপালা সমেত গাছগুলো আড়মোড়া দিয়ে জেগে উঠতে চাইছে। সূর্যের আলোকরশ্মির ছোঁয়া পেয়েই যেন ভাঙছে তাদের শীত ঘুম। সেই সেপ্টেম্বরের ঠান্ডা হাওয়ায় তারা হয়েছিল ঘুম কাতুর, আর তাই নিজের সকল পত্র- মল্লিকাগুলোকে শয্যাশায়িত করেছিল ভূ-শয্যায়, একেবারে শুকনো ডালপালা নিয়ে নিজেরা গিয়েছিল লম্বা সময়ের জন্য শীত ঘুমে। আজ সূর্যের দেখা মিলতেই সূর্যের আলোয় শিহরিত হয়ে জেগে উঠেছে তারা। প্রথমেই খুঁজছে আর পেতে চাইছে তার মল্লিকাদের।

চারিধারে গাছপালা, লতাগুল্মের দ্রুত সজীব হয়ে উঠার যে প্রয়াস নিজ চোখে না দেখলে যেন কিছুতেই তা অনুভব করা যাচ্ছে না। গাছে গাছে, ঘাসে ঘাসে শুধু ফুল আর ফুল। পাতারা যেন ফুলের সাথে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠছেনা বলে পারছেনা নিজের স্থান দখল করে নিতে।

সমগ্র প্রকৃতি জুড়েই নানান বর্ণের ফুলের উঁকি ঝুঁকি। কিছু কিছু ফুল অতি অল্প আলো এবং উত্তাপে ফুটে উঠে। তার মধ্যে বেগুনী বর্ণের চেরী ফুল ( Cherry blossom), সাদা বর্ণের Stranchspiere, Flieder এবং সবচেয়ে বেশী ফোটে হলুদ রঙের চার চার পাপড়ি বিশিষ্ট Forsythie. আমাদের দেশে বিস্মৃত মাঠ জুড়ে যেভাবে সরিষা ফুল ফোঁটে, যেমন
করে মন কেড়ে নিয়ে যায় ঠিক সেরকমের মনকাড়া দৃশ্য এ ফুলের ক্ষেত্রেও।
কী অপরূপ! কী অসাধারণ!

Previous
Previous

অনামিকার ভাবনা - উনিশ (19)

Next
Next

আনামিকার ভাবনা - সতের (17)